সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জে বজ্রপাত ঠেকাতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়, বায়ু দূষণরোধে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় আট হাজার তালগাছের চারা রোপণ করেছেন বৃক্ষপ্রেমী রাশেদুল হাসান (মামুন) ও সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা কোরবান আলী।
গত ২০০৮ সাল থেকে আজ অবধি পর্যন্ত বিশেষ করে সদর উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দু’পাশে, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সহ গুরুত্বপূর্ণফাকা স্থানে প্রায় ১৫ হাজার তালগাছের চারা এবং অন্যগাছের চারা লাগিয়ে আসছেন। তালগাছ রোপনের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সী মানুষদের এই উপকারী বৃক্ষটি রোপনের জন্য নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। জানা যায় যে, রাশেদুল হাসান (মামুন) পিতা- মরহুম আব্দুল হামিদ আকন্দ, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ১ নং রতনকান্দি ইউনিয়নের চিলগাছা গ্রামের বাসিন্দা তিনি একজন চাকরি জিবি শত ব্যস্ততার মধ্যে দিয়েও রোপণের পর পরই গাছগুলো পরিচর্যা করতেও ভুলে যান না তিনি। অপরদিকে, কোরবান আলী একজন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি একজন সাদা মনের , সাহিত্যমনা মানুষ, বৃক্ষ প্রেমিক তিনিও রাস্তার ধারে ফাঁকা স্হানে তালের বীজরোপন সহ বিভিন্ন বৃক্ষের চারাগাছ রোপণ করে আসছেন যুগ যুগ ধরে। মঙ্গলবার( ১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুই দিন দিনব্যাপী সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ১ নং রতনকান্দি ইউনিয়নের মহিষামুড়া চরপাড়া হতে হরিণা পিপুল বাড়িয়া বাজারের এম এ মুনসুর আলী সড়কের দুই দু’ধারে তালের বীজ রোপন করেন।
তালবীজ রোপনকারী রাশেদুল হাসান (মামুন) সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছোটবেলায় থেকেই বৃক্ষরোপণের প্রতি আন্তরিকতা ও অন্যান্য গাছের তুলনায় তালগাছটি বজ্রপাত ঠেকাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে বলে তা দেখে প্রথমে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম। পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি বিপদজনক বজ্রপাত থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য আমি তাল গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এ পর্যন্ত ১৫ হাজার তালবীজ সংগ্রহ করে সেগুলো গুরুত্বপূর্ন বিভিন্ন স্থানে লাগিয়েছি, নিয়মিত পরিচর্যার কারনে প্রায় গাছগুলিই বেড়ে উঠেছে যা এখন দৃশ্যমান। শুধু তাই নয় বাসা বাড়ী, হোটেল ও নিজ উদ্যোগে তালের বীজ ক্রয় করে সরকারি কিংবা কারো ব্যক্তিগত জায়গা যেখানে খালি পেয়েছি সেখানে এই মানব সম্পদ রক্ষায় তালগাছ লাগিয়েছি। তিনি আরো বলেন, জায়গা কার সেটা দেখার বিষয় নয়, বিষয় হচ্ছে গাছ লাগানো। নিজের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যই বৃক্ষরোপণ করছি। গত বছরে সিমান্ত বাজার থেকে ভেওয়ামাড়া বাজার পযন্ত রাস্তার দুই পাশে তালের চারা সহ বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি চারা লাগানো হয়েছে। সে গুলো মোটামুটি বড় হয়ে উঠেছে। তার পর লাগানো হয়েছে সিরাজগঞ্জ ক্রসবার তিনে ১৫ বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছের চারা লাগানো হয়েছে। মুনসুর আলী মেডিক্যাল হাসপাতালে প্রায় ৭ শত চারা লাগানো হয়েছে। তিনি বলেন, এগুলো আমরা বিভিন্ন নার্সারি থেকে কালেকশন করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছাত্র ছাত্রীদের সহযোগিতা নিয়ে এ কাজ গুলো করে থাকি। আজকে সহযোগিতা করছেন বয়ড়া ভেন্নাবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহা কামাল এবং তার স্কুলের ছাত্র ও গ্রামের কিছু যুবক ভাইয়েরা।এবিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু আউয়াল বলেন, এগুলো খুবই ভালো কাজ এগুলো গাছপালা মানবদেহের খুবই উপকারিতা আমরা যে যার যায়গা থেকে একটু সচেতন হয়ে গাছগুলোর রক্ষা করতে পারি সেই পরামর্শ দিয়ে আসবো।
এ প্রসঙ্গে জেলা কৃষি কর্মকর্তা বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, আমি এই জেলায় আসার আগে বজ্রপাত রোধক অবদান রাখছেন, শুনেছি রাশেদুল হাসান মামুন। এটি অত্যন্ত উপকারী একটি বৃক্ষ যা মানব সম্পদ রক্ষায় বিরাট ভূমিকা রাখে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি পদন্নোতি হয়ে অন্য জেলায় চলে আছি দেখতে পারলাম না।