আব্দুস সোবহান চান, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ):
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের স্থলবাড়ি গ্?ামের বাক প্রতিবন্ধী দিনমজুর শিপন মিয়া(৩৫) কে কাজের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে অপহরণ ঘটনার ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও অপহৃতের সন্ধান মেলেনি। সম্প্রতি এসংক্রান্ত চলমান মামলার ১নং আসামি রুবেল আটকের পর ছাড়া পেয়ে শিপনের ছোট ভাইয়ের নামে মামলা দিয়েছে।
এতে করে ভুক্তভোগী পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কৌতুহল জেগেছে, সে কি জীবিত
আছে নাকি মৃত, অথবা অন্য কিছু, শিপনের সাথে ঠিক কি ঘটেছে। আদৌ কি জানা যাবে। অসহায় পরিবারের দিন কাটে হতাশায়।
মামলা তদন্তে নিয়োজিত পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর জানিয়েছেন তদন্ত চলমান আছে। এর আগে গত ১৩/২/ ২০২৪ ইং তারিখে কাজের কথা বলে শিপনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় একই গ্?ামের রুবেল।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাক প্রতিবন্ধীকতা সত্ত্বেও স্বাভাবিক মানুষের মতোই দুসন্তান নিয়ে সুখী পরিবার মৃত চান মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া দম্পতির। জীবিকার তাগিদে কৃষি কাজে দিনমজুরি করে যা আয় হতো তা দিয়েই টেনেটুনে ৪ জনের সংসার চলতো।
প্রতিবেশী খোশলেহাজের ছেলে রুবেলের নেতৃত্বে একই গ্?ামের নাইদার ছেলে লাভলু(২৫), শুকুরের ছেলে তোজাম(৫২), এবং ছালামকে নিয়ে দল বেঁধে দূরে মানিকগঞ্জ জেলায় কাজ করার কথা বলে গত ১৩/২/২০২৪ খ্রি. তারিখে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় তাকে। তিনদিন পর অন্যান্য সবাই ফিরে এলেও শিপন মিয়া ফিরে আসেনা। সঙ্গীরা কেউ বলতে পারে না শিপন কোথায় তবে সে রুবেলের সাথে যেতে দেখেছে। উদ্বীগ্ন পরিবার স্থানীয় থানায় গেলে ঘটনাস্থল উপজেলার বাইরে অজুহাতে মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়রিতে বাড়ি থেকে বাজারে যাওয়ার পথে নিখোঁজ লিপিবদ্ধ করে। কাজিপুর থানা জিডি নং ৪০৫/৮/৪/২০২৪ ইং।
থানা পুলিশের অসহযোগিতার পূর্ণ আচরণে ভরসা না পেয়ে আদালতে রুবেলসহ ৪ সঙ্গীকে আসামি করে অপহরণ মামলা দায়ের করে শিপনের ছোটভাই সজিব মিয়া(২০)। মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। সজিব মিয়া জানান, পিবিআইয়ের মামলা তদন্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা মানিকগঞ্জে যাওয়ার কথা বলে তার কাছে থেকে ৩০ হাজার টাকা নগদ নেন, চরা সুদে টাকা তুলে তাকে দেয়া হয়। ঘটনার চার মাস পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার তো দুরের বিষয় উল্লেখযোগ্য অগ্?গতি না থাকায় হতাশ হয়ে পরেছে শিপনের পরিবার। একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তির অনুপস্থিতি এবং প্রশাসনের উদাসীনতা অসচ্ছল পরিবারটিকে অসহায় করে তুলেছে। সম্প্রতি মামলার প্রধান আসামি রুবেল আটক হবার পর ছাড়া পেলে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিপনের সাথে ঠিক কি ঘটেছে? সে কি জীবিত নাকি মৃত, অথবা অন্য কিছু, আদৌ কি জানা যাবে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল। ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার সত্যতা উদ্ধারের জন্য সিবিআই টিমের সাথে আমি ছিলাম, সে কখনো বলে মারা গেছে দূর্ঘটনায়, আবার বলে টাঙ্গাইল পতিতালয়ে গেলে মেরে ফেলেছে। এই বিষয়ে শিপন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে বিভিন্ন যায়গায় নিয়ে গেছে, ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় আমাকে ছেড়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, মামলা তদন্ত চলছে, আসামিকে মানিকগঞ্জ থেকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।