তথ্য ও চিত্রে মো: সজিব হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:
মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে মোবাইলে কথা বলা কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাঁধে আবারো চাপানো হচ্ছে খরচের বোঝা। ৩ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে সম্পূরক শুল্ক। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয় এর সাথে কার্যকরী ভ্যাট ১৮ শতাংশ ও সারচার্জ ১ শতাংশ। এছাড়া সিম-কর, রাজস্ব ভাগাভাগি সহ অন্যান্য কর মিলিয়ে গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জ করলে ৫৪ টাকা ৫০ পয়সা নেই সরকার।
মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এক্ষেত্রে ১০০ টাকা রিচার্জে ৫৬ টাকার বেশি যাবে সরকারের কোষাগারে। বাংলাদেশে বর্তমান মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী সংখ্যা ১৮ কোটি ৭৭ লাখ। ফলে বছরে অন্তত ১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি
রাজস্ব সরকারি কোষাগারে যাবে বলে মনে করছে তারা। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
মোবাইল পরিষেবায় শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগ এমন সময় নেয়া হচ্ছে যখন মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমছে। এ সিদ্ধান্ত গ্রাহকের ওপর বাড়তি বোঝা চাপবে এবং মোবাইল ফোন অপারেটর ও সরকারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা আল আমিন শেখ বলেন, ‘মঙ্গলবার শুল্কসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন আসতে পারে। তবে কত শতাংশ, তা বলতে পারছি না।’
গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস শারফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘এখনো ধকল কাটিয়ে উঠছে অর্থনীতি, জাতীয় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে। দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে এই বাড়তি বোঝা গ্রাহকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।
এ বিষয়ে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার মোহাম্মদ সাহেদুল আলম বলেন, ‘সরকার যে উদ্দেশ্য নিয়ে কর বাড়ায়, তা সফল হয় না। আমরা এর আগে দেখেছি, যখনই শুল্ক বাড়ানো হয়, তখন জনগণ তার খরচটা লিমিট (সীমিত) করে ফেলে। শুল্ক বাড়ানোর ফলে মানুষ মোবাইলে কথা বলা কমিয়ে দিতে পারে। এতে রাজস্ব আরও কমতে পারে।’
শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও ফ্যাসিবাদী আচরণ বলে মনে করছে বাংলাদেশ মোবাইল গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, যেখানে দেশের এখনো ৪৮ শতাংশ জনগণ ইন্টারনেট সেবার বাইরে, সেখানে নতুন করে এই উচ্চ করহার নাগরিকদের ইন্টারনেট সেবা থেকে বিমুখ করবে, নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবে।