মাহমুদুল হাসান, চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
“শেখ হাসিনার মূলনীতি গ্রাম শহরের উন্নতি” অল্প সময়ে, সল্প খরচে সঠিক বিচার পেতে চলো যাই গ্রাম আদালতে ” এমন শ্লোগানকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সংক্রিয়করণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পে কাজ করছে ইকো-সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও)। গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকা কর্তৃক ২০৪১ উন্নত উদ্বাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন হচ্ছে।
ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, বাংলাদেশ সরকার এবং ইউ এনডিপির অর্থায়নে ও (ইএসডিও)’র বাস্তবায়ন সহযোগিতা ফিল্ড পর্যায়ে চৌহালী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নকে ঢেলে সাজানো ও গ্রাম আদালত আরও গতিশীল এবং শক্তিশালী করণে সকল গ্রাম পুলিশদের নিয়ে গ্রাম আদালত বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল মুক্তিযুদ্ধা কমপ্লেক্সে উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশদের গ্রাম আদালত বিষয়ক কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান স্যার। এসময় উপস্থিত ছিলেন চৌহালী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শ্যামল কুমার দত্ত, ডিসটিক ম্যানাজার মোঃ আব্দুল হান্নান, উপজেলা সমন্বয় কর্মকর্তা মো, শহিদুল ইসলাম। বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য ও গ্রাম আদালতের সুবিধা- গ্রাম আদালত সর্ব্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা মুল্যমানের ফৌজদারি ও দেওয়ানী মামলা নিষ্পত্তি করতে পারে, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সহ উভয় পক্ষের ২ জন করে মনোনীত প্রতিনিধি নিয়ে গ্রাম আদালত গঠিত হয়, নিজ ইউনিয়ন পরিষদেই গ্রাম আদালত বসে, বিচারিক প্যানেলে নিজেইন প্রতিনিধি নিজেই মনোনয়ন দেয়া যায়, বাদি এবং প্রতিবাদী নিজেরাই নিজেদের কথা বলেতে পার, আইনজীবী নিয়োগের বিধান নেই। ফৌজদারি মামলার ফ্র ১০টাকা এবং দেওয়ানী মামলার ২০টাকা। এছাড়া কোন খরচ নেই।
গ্রাম আদালত যেসব বিরোধ নিস্পত্তি করতে পারে- চুরি, ঝগড়া-বিবাদ,কলহ বা মারামারি, দাঙ্গা, প্রতারনা,ভয়ভীতি দেখানো বা হুমকি দেয়া, কোন নারীর শালীনতাকে অমর্যদা বা অপমানের উদ্দেশ্যে কথা বলা,উত্যক্ত করা। গচ্ছিত কোন মুল্যবান সম্পত্তি আত্মসাত করা, পাওনা টাকা আদায়,স্থাবর সম্পত্তির দখল ও পূর্ণ উদ্ধার বা তার মুল্য উদ্ধার, কোন অস্থবর সম্পতি জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্য ক্ষতিপুরণ আদায়।গবাদিপশুর অনাধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপুরণ,গবাদিপশু মেরে ফেলা বা গবাদিপশুর ক্ষতি করা,কৃষি শ্রমীকের পরিশোধযোগ্য মজুরি ও ক্ষতিপুরণ আদায় ইত্যাদি।
বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য- বাংলাদেশের সুবিধা বঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিচার ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ অবদান রাখা, সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য – স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সুসংগঠিত গ্রাম আদালতের মাধ্যমে স্থানীয় বিচারিক চাহিদা এবং যথাযথ আইনি সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অধিকেতর সংবেদনাশীল করা, স্থানীয় জনগণ বিশেষ করে নারী, দরিদ্র ও বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন করা: যাতে তারা তাদের প্রতি সংঘটিত অন্যায়সমূহের প্রতিকার চাইতে পারে এবং স্থানীয় পর্যায়ে দ্রুততম সময়ে, স্বল্প খরচে ও স্বচ্ছতার সাথে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে।
গ্রাম আদালতের ভিওি গ্রাম আদালত আইন-২০০৬ (সংশোধিত-২০১৩) ও বিধিমালা-২০১৬ নিয়ে দেশের ৪৪৫৩ টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কাজ চলমান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন গ্রাম আদালতের উপজেলা সমন্বয় অফিসার।
সভায় গ্রাম আদালতে আবেদন গৃহীত হলে গ্রাম পুলিশ কতৃক নির্দিষ্ট তারিখে আবেদনকারী ও প্রতিবাদী উভয় পক্ষকে উপস্থিত হতে সমনজারি করতে হবে এবং সমনের উল্টো পৃষ্ঠায় সমন প্রাপকের প্রাপ্তি সূচক স্বাক্ষর নিতে হবে? প্রতিবাদীকে পাওয়া না গেলে সমনের এক প্রস্থ তার বাড়ীর প্রকাশ্য স্থানে টানিয়ে দিতে হবে। এলাকায় যদি কোন সমস্যা মনে হয় প্রশাসনকে অবগত করার জন্য আহবান করবেন। স্ব-স্ব এলাকায় নিজ দায়িত্ব পালন করার জন্য পরামর্শ দেন।
গ্রাম-পুলিশদের উপস্থিতে সমাজে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় গ্রাম আদালত বিষয়ক কর্মশালায় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন বক্তারা।