মোঃ মুকিম উদ্দিন:
দিরাইয়ে জগদল ইউনিয়নে ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করা হয়েছে অত্যাধুনিক হাসপাতাল ভবন। ভবনটিতেও রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জাম। হাওর পারের মানুষের চিকিৎসা সেবা প্রদানের সকল ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসক সংকট ও যাতায়াতের রাস্তা না থাকার ফলে ভাটির জনপদ দিরাই জগদল ইউনিয়নের মানুষ কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেনা। হাওরবেষ্টিত জগদল গ্রামে প্রায় ৭/৮ বছর আগে ওই ২০ শয্যা হাসপাতালের উদ্বোধন করা হয়েছিল খুব তড়িঘড়ি করে। প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হলেও রাস্তা না থাকায় চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেনা মানুষ।
জানা যায়, হাওরাঞ্চলে বর্ষাকালে চারদিকে পানি থাকায় দরিদ্র মানুষকে চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে অনেক বিপাকে পড়তে হয়। সরাসরি সড়ক যোগাযোগ না থাকায় অনেক রোগীকে নৌকাযোগে উপজেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে অনেক কষ্টকর ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। রাতের বেলায় দুর্গম হাওর পাড়ি দিয়ে চিকিৎসা সেবা নেয়া অসম্ভব। এ অবস্থায় জগদল ইউনিয়ন ও আশপাশের ১৫/২০ টি গ্রামের লোকজনের কাছে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে হাসপাতাল নির্মান করা হয়। দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে তৎকালীন সরকারের আমলে জগদল ইউনিয়ন ২০ শয্যা বিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০০৬ সালে হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মান কাজের উদ্বোধন করা হয়। হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মান কাজ শেষ করে ২০১৩ সালের ২৩ অক্টোবর এ হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, অত্যাধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, অফিস সহকারী, ল্যাব এটেনডেন্টসহ ১৩ টি পদ রয়েছে।উদ্বোধনের ১২ বছর অতিবাহিত হলেও অধিকাংশ পদে লোক নিয়োগ দেয়া হয়নি।
জগদল ইউনিয়নের জগদল গ্রামের হুসিয়ার মিয়া বলেন, এলাকার অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র নুন আনতে পানতা পুরায়। চিকিৎসা নিতে দুরে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। বর্ষায় এই এলাকার একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা হচ্ছে নৌকা, রাস্তা না থাকায় চিকিৎসা সেবা নিতে পারেনা গরীব লোকজন। রাস্তা হলে সব সময় চিকিৎসা সেবা নেয়া সম্ভব ও অসহায় গরীব লোকজন খুবই উপকৃত হবে। এই ইউনিয়নের বেশীরভাগ লোকজন হাওরাঞ্চলের গ্রামে বসবাস করে। তবে এই হাসপাতালে ১২ বছর যাবত কোন ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে আমরা বঞ্চিত।
দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ওপরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসিবুর রহমান জানান, হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু জনবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। যার ফলে চিকিৎসক সংকটের কারনে এর কার্যক্রম চালানো সম্ভব হচ্ছে না। এই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।