সাব্বির মির্জা, (তাড়াশ) প্রতিনিধিঃ
স্বামীর মৃত্যুর পর জোর করে সব সম্পত্তি লিখে নেন ছেলেরা। বিয়ে দেওয়ার পরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বাপের বাড়ি ফিরে আসেন এক মেয়ে। আরেক মেয়ের এক সন্তান মানসিক প্রতিবন্ধী। সেই প্রতিবন্ধী সন্তানকে ফেলে গেছেন বৃদ্ধা মায়ের কাছে।
মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে ও শারীরিক প্রতিবন্ধী নাতনিকে নিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন বৃদ্ধা জোবেদা খাতুন।
মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় কোনো রকমে দিন কাটছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দেশিগ্রাম ইউনিয়নের ভোগোলমান গ্রামের জোবেদা খাতুনের (৮০)।
জানা গেছে, বৃদ্ধার স্বামী ওয়াহেদ আলী ছিলেন অনেক সম্পদের মালিক। ২০০১ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলেরা সব সম্পত্তি লিখে নিয়ে মায়ের আর খোঁজ রাখেনি। এরপরই অন্ধকার নেমে আসে বৃদ্ধা জোবেদার ঘরে। মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে ফিরে আসলে শুরু হয় নতুন সংগ্রাম। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়ে ফলাফল না পেয়ে মেয়েকে ঘরে শিকলবন্দি করে রাখেন। এদিকে আরেক মেয়ের সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকেও রেখে গেছে জোবেদা খাতুনের কাছে।
যেখানে অনাহারে নিজের টিকে থাকায় দায় সেখানে বাড়তি দুই প্রতিবন্ধী নিয়ে অকূল পাথারে পড়েছেন আশি বছরের এ বৃদ্ধা। কেউ সাহায্য করলে জোটে খাবার, নইলে থাকতে হয় অনাহারে।
এ দিকে জোবেদা খাতুনের এক ছেলে মো. শাজাহান আলী গত দুই বছর হলে মারা গেছেন। তার আরেক ছেলে মো. আলম সরকার কোনো খোঁজখবর নেন না। জোবেদা খাতুনের নিজস্ব কোনো জায়গা জমিও নেই। যে ঘরটিতে থাকেন তাও বৃষ্টি হলে হয়ে পড়ে থাকার অনুপযোগী।
জোবেদা খাতুন বলেন, বাবারে আমি আর পারছি না। নিজেই চলতে পারছি না। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। সে ভাতার টাকায় সংসারের খরচ চলে না। ওই টাকায় মাসের ২০ থেকে ২২ দিন চলে। বাকি দিনগুলো গ্রামের অন্যান্য লোকদের কাছ থেকে চেয়ে খেয়ে না খেয়ে পার করতে হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুইচিং মং মারমা বলেন, আমি চেষ্টা করব যেন তারা দ্রুত আর্থিক সহায়তা পান।