রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বহরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সেকেন্ডারী স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার্থীদের নির্ধারিত ফি'র বাইরে কোচিং (অতিরিক্ত ক্লাস) এর কথা বলে একপ্রকার জোরপূর্বক আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। এমনকি কোচিং (অতিরিক্ত ক্লাস) এর টাকা না দিলে ফরম পূরণ করা যাবে না বা পরে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হতে পারে বলেও বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শন করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত তিন শিক্ষক নজরুল ইসলাম গাজী, পঙ্কজ কুমার ভৌমিক ও মোঃ রহমত আলী। অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিনে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনার সত্যতার প্রমাণ মেলে। বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ শেখকে পাশকাটিয়ে মোঃ নজরুল ইসলাম গাজী, পঙ্কজ কুমার ভৌমিক ও মোঃ রহমত আলীর নির্দেশে ফরম পূরণে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকগণশিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের একপ্রকার জিম্মি করে এই অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পরীক্ষার্থী আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ কার্যক্রম প্রায় শেষের পথে। কিন্তু পরীক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে পারে পরীক্ষার্থীদের জন্য কোচিং (অতিরিক্ত ক্লাস) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে ফরম পূরণের নির্ধারিত ফি ছাড়াও প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে আরও অতিরিক্ত ২ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। অনেক পরীক্ষার্থী কোচিংয়ে (অতিরিক্ত ক্লাস) অনাগ্রহ দেখালেও কোচিং (অতিরিক্ত ক্লাস) ফি'র টাকা বাধ্যতামূলক পরিশোধ করার জন্য বিদ্যালয়ের উক্ত তিন শিক্ষক একপ্রকার চাপ প্রয়োগ করে। এখানে দেখা গেছে, আগে এক শিক্ষকের কাছে কোচিং নামের বাড়তি টাকা জমা দিয়ে সাদা কাগজের স্লিপ গ্রহণ করার পর ফরম পুরণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এবং কোচিং এর টাকা জমা নেওয়া স্লিপ ফরম পুরণের সময় নিয়ে নেয় অন্য শিক্ষক। কোচিংয়ের (অতিরিক্ত ক্লাস) টাকা না দিলে তাদের ফরম পুরণ করতে দিচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশকে উপেক্ষা করে কোচিংয়ের (অতিরিক্ত ক্লাস) জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। কোচিং (অতিরিক্ত ক্লাস) না হলে ফলাফল খারাপ হতে পারে। শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য কোচিং (অতিরিক্তক্লাস) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বলে জানান।
সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্রী স্বপন কুমার দাসের নিকট এসএসসি ফরম পূরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য না করে সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম গাজীকে ডেকে আনেন। কোচিং (অতিরিক্ত ক্লাস) বাধ্যতামূলক এমন না। তবে শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষকরা এই ব্যবস্থা করে ২ হাজার টাকা বেশি নিচ্ছে। অভিভাবকরা যদি আনাগ্রহ ইচ্ছুক প্রকাশ করে তাহলে আমরা আর টাকা নিব না।
সার্বিক বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ শেখকে মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি বলেন, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ তবে টাকা বেশি নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমি শুনেছি ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষকরা বাড়তি ক্লাস (কোচিং) করানোন জন্য কিছু টাকা নিচ্ছেন।
এবিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিকক নজরুল ইসলাম গাজী ও পঙ্কজ কুমার ভৌমিক বলেন, আমরা এটা নিচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য কোচিং (অতিরিক্ত ক্লাস) করানোর জন্য অতিরিক্ত কোচিং ফি নিচ্ছি। এরবেশি এবিষয়ে কোনপ্রকার মন্তব্য করতে বাধ্য নই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানা বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আর বেশি টাকা নেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। আপমার কাছেই প্রথম শুনলাম। তবে বেতন বাঁকী থাকলে সেইক্ষেত্রে বেতন পরিষোধ করতে হবে। কিন্তু ফরম পুরণে বেশি টাকা নিলে সেটা অপরাধ। বেশি নেওয়ার কোন মতোই সুযোগ নেই। আর যদি এমন হয় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এবিষয়ে এখনো কোন লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ পাইনি পেলে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছু এখন পর্যন্ত জানিনা। আপনার মাধ্যে শুনলাম। আমি কথা বলে দেখছি।
রাজবাড়ী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি হয়তো ব্যস্ত থাকায় ফোন রিসিভ না হওয়ায় তার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হলো না।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: হাসান ইমাম তালুকদার
মোবাইল: 01711412874, 01712197481
ঢাকা অফিস: ৫০/১,পল্টন লাইন, পুরানা পল্টন,পল্টন, ঢাকা।
সিরাজগঞ্জ অফিস: হাউস নম্বর ৪০, মায়া কুঞ্জ, মোক্তার পাড়া, সিরাজগঞ্জ।
Design & Development By HosterCube Ltd.