নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য-জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর ব্যক্তিগত জায়গায় ও ব্যক্তিগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারী টাকায় একাডেমিক ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বড়াইগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজ। শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজ শেষে উপজেলার বনপাড়া পৌর শহরের প্রধান সড়কে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। দুই শতাধিক সচেতন ও সুধী সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে প্রায় এক ঘন্টা স্থায়ী এই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বড়াইগ্রাম সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ডা. রাশেদুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল আওয়াল মমিন, নাসির গাজি, আতিকুর রহমান সহ অন্যান্যরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসর অবৈধ দুর্নীতিবাজ সাবেক এমপি ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী তার নিজ নামীয় জমিতে ও নিজ মালিকাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারী ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৬৪ হাজার ৬শত টাকা ব্যয়ে চারতলা বিশিষ্ট ভবনের একতলা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় গত বৃহস্পতিবার। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম এ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ খবর জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে সচেতন নাগরিক সমাজ। সরকারী টাকা কি করে তার ব্যক্তিগত নামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এস.আর পাটোয়ারী কোয়ালিটি এডুকেয়ার ইনস্টিটিউট এর জন্য বরাদ্দ হয় তা কারও কাছেই বোধগম্য হচ্ছে না। এছাড়া ওই সাবেক এমপি বিভিন্নভাবে দুর্র্নীতি করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছে। ওই দুর্নীতিবাজ সাবেক এমপি এই বহুতল ভবন কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করার অপচেষ্টা করছে। এ অন্যায় ও দুর্নীতি বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে মানবন্ধন করে প্রতিবাদ করা হলো। জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা আরও বলেন, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জোয়াড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, মাঝগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় সহ প্রায় ২০টিরও অধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে আধাপাকা ও জরাজীর্ণ অবস্থায়। এ সব ভগ্নদশা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিবেচনা করে যে কোন একটি বা দুইটিতে এই বরাদ্দ দিয়ে ভবন নির্মাণ করার দাবি জানাই আমরা। সাবেক দুর্নীতিবাজ এমপি’র ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের এই সরকারী বরাদ্দ বাতিল না করলে আগামীতে আরও বৃহৎ ও কঠোর কর্মসূচী দিয়ে এর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে জানায় বক্তারা।
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম জানান, জনাব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী এমপি থাকা অবস্থায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে এই বরাদ্দ অনুমোদন করে নিয়ে আসেন। এই বরাদ্দ রিভিউ করার সুযোগ এখনও আছে।
উল্লেখ্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সাবেক ওই এমপি অবৈধভাবে বিভিন্ন সময় সরকারী মোটা অংকের টাকা তার মালিকাধীন প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ করেছেন ও কাজ বাস্তবায়ন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।