‘দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন-নিপীড়নের মাঝেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাদের নীতি-আদর্শ থেকে এক বিন্দু সরে যায়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধে ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে যেভাবে অংশগ্রহণ করেছিল, ঠিক একইভাবে ২৪-এর গণবিপ্লবেও এসব পরিচয় ছিল না। সবার এক পরিচয় ছিল বাংলাদেশি। সেক্ষেত্রে সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, বাঙালি, অবাঙালি বলে কিছু নেই। বরং দলমত, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকটি নাগরিকেরই এক রাষ্ট্র বাংলাদেশ।’ -বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন।
ডোমার উপজেলা বিএনপির মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাস থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন। বুধবার বিকালে ঐতিহাসিক বাটার মোড় রুবেল চত্বরে মহাসমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
ইঞ্জিনিয়ার তুহিন বলেন, ‘১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা নিয়ে লালদিঘী ময়দানের জনসভায় শেখ হাসিনা বলেছিলেন যারা নির্বাচনে যাবে, তারা জাতীয় বেইমান হবে। সেবার আওয়ামী লীগও অংশগ্রহণ করেছিল এবং তাদের দোসর ছিল জামায়াতে ইসলামী। গত ১৭ বছর যাবৎ বিএনপির নেতা-কর্মীদের মতো তারাও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অথচ নতুন স্বাধীনতার পর জামায়াত একটি ফ্যাসিস্ট দলকে ক্ষমা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘যারা হত্যার শিকার হয়েছে, যারা হতাহত হয়েছে, তারা ন্যায়বিচার পাওয়ার স্বাধীনতা লাভ করুক। এছাড়া যারা হত্যা করেছে, অত্যাচার করেছে তাদের বিচার চায় বিএনপি। দোষীদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। বিএনপি একটি আপোষহীন দল।’
বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো বিরোধীদলে আছি। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্বে আছে। জনমানুষের দোয়া ও ভালোবাসায় বিএনপির ভালো সময় যাচ্ছে। এজন্য সকল নেতা-কর্মীকে সংযত হতে হবে। সাধারণ জনগণের ভালোবাসায় থাকতে হবে। সবার সাথে ভালো আচরণ করতে হবে। সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন উদ্যত ব্যবহার করা যাবে না। ক্ষুদ্র মতপার্থক্যের জন্য বৃহৎ স্বার্থকে জলাঞ্জলি দেওয়া যাবেনা।’
ডোমার-ডিমলার আগামীর উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আমরা শিক্ষার মানোন্নয়ন করবো। আমি চাই প্রত্যেক ঘরে অন্ততঃ একজন শিক্ষিত ডিগ্রিধারী ব্যক্তি থাকবে। নারীদের শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। নীলফামারীতে ভালো ও উন্নতমানের হাসপাতাল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং সর্বোপরি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে বেকারত্ব দূর করতে কাজ করা হবে।’
ডোমার উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ রেয়াজুল ইসলাম কালুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আখতারুজ্জামান সুমনের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ আনিছুর রহমান আনু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোজাফফর আলী, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান তুলু, মোঃ মাসুদ বিন আমিন সুমন প্রমুখ সহ উপজেলা, পৌর ও বিভিন্ন ইউনিয়ন শাখার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে, দুপুর থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে জড়ো হয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, তাঁতী দল, শ্রমিক দল সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। বলা যায়, বাটার মোড় থেকে রেলগেট মোড়ের পুরো সড়ক সহ আশেপাশের বিভিন্ন সড়ক নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়।