স্টাফ রিপোর্টার:নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলাধীন পাহাড়কাটা মেফতাহুস সুন্নাহ দাখিল মাদ্রসার সুপার মো: সামসুর রহমানের বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
মামলা ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উক্ত প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গত ১৯-০৯-২০২৩ইং তারিখে এবং গত ২৭-০৯-২০২৩ইং তারিখে একজন সহকারী সুপার পদে নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে গত ২৬-০২-২০২৪ইং তারিখে নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু গত ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ইং ও ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ইং তারিখে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির কতিপয় সদস্য বিরোধিতা করে বিজ্ঞ পতœীতলা সহকারী জজ আদালতে ২৯/২০২৪ অ: প্র: মোকদ্দমা আনয়ন পূর্বক অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দুইটি মামলা দায়ের করেন। আদালত কর্তৃক উক্ত মামলার নোটিশ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দাতা সদস্য মোঃ আব্দুল ছিদ্দিক মন্ডলকে না জানিয়ে মাদ্রসার সুপার মো: সামসুর রহমান গোপনে ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ইং তারিখে অবৈধ ভাবে নিয়োগ নির্বাচনী পরিক্ষা সম্পন্ন করেন। এর পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ইং তারিখে মাদ্রাসার সুপার মো: সামসুর রহমান সভাপতিকে মামলার বিষয় অবগত করে তাকে সঙ্গে নিয়ে আদালত কর্তৃক উক্ত মামলার জবাবের জন্য নওগাঁ আদালতে যান। বিষয়টি তখন সভাপতি জানতে পেরে মাদ্রাসার সুপারকে বলেন, আদালতে মামলা চলমান থাকার কারণে নিয়োগে নির্বাচিত প্রার্থীদের কার্যক্রম স্থগিত করা হোক। কিন্তু সুপার অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত থেকে নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে গত ২৯-০২-২০২৪ইং এবং ০৪-০৩-২০২৪ইং তারিখে দুটি রেজুলেশনের মাধ্যমে সভাপতির অনুপস্থিতে সভাপতির স্বাক্ষর ও সিল জাল করে সহকারী সুপার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও নৈশ প্রহরী এই তিনটি পদে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ অনুমোদন ও যোগদান অনুমোদন করেন।
সভাপতির স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি করার কারণে তিনি নিয়োগ অনুমোদন এবং প্রার্থীদের যোগদান বৈধ নয় মর্মে গত ২৫-০৩-২০২৪ ইং তারিখে জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর যোগসাজসমূলক নির্বাচিত প্রার্থীদের বিল বেতন ও এমপিওভুক্ত না করার সুপারিশ প্রদানের জন্য লিখিত আবেদন করেন এবং বিজ্ঞ নওগাঁ জেলা আদালতে মাদ্রাসার সুপার মো: সামসুর রহমান সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ২০১/২৪ সি,আর (পতœী)। মামলার অন্য আসামীরা হলেন: মো: আবুল কালাম আজাদ, মো: রমজান আলী, মোছা: শিরিন আক্তার ও মো: সাখাওয়াত হোসেন। তারা সবাই শিক্ষক প্রতিনিধি।
অপরদিকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুল ছিদ্দিক মন্ডল মাদ্রাসার সুপার মো: সামসুর রহমানের এসব অবৈধ কর্মকা-ের বিবরণ উল্লেখ করে সকল বিষয়াদি যাচাই অন্তে তদন্ত সাপেক্ষে গৃহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মহা পরিচালক, মাদ্রসা শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা বরাবর গত ২৮-০৪-২০২৪ইং তারিখে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।এছাড়া মো: আব্দুল ছিদ্দিক মন্ডল সভাপতি হওয়ার পর লক্ষ করেন কাগজে কলমে অত্র মাদ্রাসায় প্রায় ২০০ জন ছাত্র-ছাত্রী কিন্তু বাস্তবে প্রতিনিয়ত সব ক্লাস মিলে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত হয়। বাকি সব ভুয়া ছাত্র-ছাত্রী কাগজে কলমে ভর্তি দেখিয়ে উপবৃত্তিসহ সকল সরকারী অনুদান দীর্ঘদিন ধরে আত্মসাৎ করে আসছেন অত্র মাদ্রাসার সুপার মো: সামসুর রহমান। এতে করে মাদ্রসার সুনাম ক্ষুণœসহ শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছে।এদিকে মাদ্রসার সুপারের এসব অবৈধ কর্মকা- প্রকাশ পাওয়ায় অবৈধ ভাবে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীরা তার কাছ থেকে টাকা ফেরত চাওয়ায় সুপার টাকা ফেরত দেবেন বলে কাগজে-কলমে মুচলেকা দিয়েছেন।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকসহ এলাকাবাসী উক্ত অবৈধ নিয়োগ বাতিল করত: দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন।