আশিক সরকার, কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সাত লক্ষ টাকা যৌতুক দিয়ে বিয়ে করেও ৫ বছরে একদিনও স্বামীর অধিকার পাননি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার নান্দিনা কামালিয়া গ্রামের হরমুজ আলীর মেয়ে মাহমুদা । বার বার চেষ্টা করেও মিলছে না স্বামীর দেখা ও যোগাযোগের ব্যবস্থা। একাধীকবার শশুর বাড়িতে গেলেও খুজে পাননি প্রানের স্বামীকে। উল্টো শিকার হতে হয়েছে মারধরের। এমতাবস্থায় দিশেহারা হয়ে পরেছে স্ত্রী মাহমুদা, তার বৃদ্ধা বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা ।
অন্য সাধারণ মেয়ের মতই পারিবারিক ভাবে বিয়ে ঠিক হয় মাহমুদার। ছেলেপক্ষের দাবী অনুযায়ী চাকরি নেয়ার খরচ বাবদ সাত লক্ষ টাকা নগদ যৌতুক ও হাতে কানে গহনা দ্বারা বিয়ের ব্যবস্থা করে অসহায় বাবা। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৯শে জুলাই ২০২০ সালে পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলার উত্তর সারটিয়া গ্রামের আজমত প্রামানিকের ছেলে সোহাগ প্রামানিকের সাথে বিয়ের পিরিতে বসে মাহমুদা। তখনো ছেলের বাবা ও বোন জামাইয়ের ফাদ বুঝতে পারে নাই মেয়ে মাহমুদা ও তার পরিবার। বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে গেলেও বাসর ঘরে ঢোকেনি স্বামী সোহাগ।
ঘরে না ঢোকার অন্য কারণ থাকতে পারে মনে করে সেদিন পার করে অসহায় স্ত্রী। কিন্তু তারপরদিনই বাড়ি থেকে ব্যবসায় কাজে বের হয়ে আর কোনদিন স্ত্রীর কাছে আসেনি স্বামী সোহাগ। তারপর বাবার বাড়ি থেকে শশুর বাড়ি স্বামী ছারা একাই প্রায় ছয়মাস আসা যাওয়া করতে থাকে সে। কিন্তু স্বামীর দেখা তো দূরের কথা উল্টো ব্যপক মারধরের শিকার হতে হয়েছে তাকে।
ভুক্তভোগি মাহমুদা জানান, আমি অনেকদিন ধৈর্য ধরে স্বামী ছারাই শশুর বাড়িতে পরে ছিলাম। কিন্তু আমার স্বামীকে তার বাবা ও বোন জামাই লুকিয়ে রাখে, আমার কাছে আসতে দেয় না। উল্টো আরও তিন লক্ষ টাকা দাবী করে আমাকে অনেক নির্যাতন করে। পরে সামলাতে না পেরে বাবার বাড়িতে চলে আসি। তারপর থানায় একটি যৌতুক ও নারি নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করি। কিছুদিন পরে মামলায় রায় হয় আমার দেনমোহড় বাবদ সাতলক্ষ টাকা আমাকে ফেরত এবং প্রতি মাসে খোরপোস বাবদ ৩হাজার টাকা দিতে হবে। কিন্তু সে এবং তার পরিবার আদালতের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বেরাচ্ছে। আমি আমার ন্যায্য অধিকার ফেরত চাই অথবা যৌতুকের টাকা সহ দেনমোহড়ের টাকা ফেরত চাই ।
মাহমুদার বৃদ্ধা মা-বাবা জানান, আমরা আমাদের থাকার একমাত্র সম্ভল বাড়ির অর্ধেক বিক্রি করে ও ধার দেনা করে টাকা জোগাড় করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তারা আমার মেয়ের সাথে এমন করছে। আমরা তো চারিদিক থেকে নিঃস্ব হয়ে গেলাম ।
সোহাগের বোন জামাই কাদের জানান, মাহমুদার সাথে আমার শশুর ও শেলক ঔই মেয়ের সাথে একশভাগ অন্যায় করেছে। কিন্তু তারা কত টাকা নিয়েছে বা কবে বিয়ে হয়েছে সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে সোহাগের বাবা জানান, আমার ছেলের বউয়ের কথার কোন ঠিক নেই। আমরা একাধীকবার তার সাথে মিমাংসা হতে চাইলে সে মিমাংসা করেনি। আমি তার সাথে মিমাংসা করার জন্য সবসময় প্রস্তুত।