তারিকুল ইসলাম তারিক, স্টাফ রিপোর্টার:
রংপুর পীরগঞ্জের কুমেদপুর ইউনিয়নের শরিফারপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেক মিয়া ৫৩ বছর পর সন্তানের স্বীকৃতি দিলেন সুলতানকে। বাবা আব্দুল খালেক ১৯৭০ সালে ঝড়ী মাই বেগমের সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দাম্পত্য কলহের কারনে স্ত্রী ঝড়ী মাইকে বাড়ী থেকে বের করে দেন স্বামী। পড়শীদের নিকট জানা গেছে বের করে দেওয়ার সময় ৬ (ছয়) মাসের গর্ভবতী ছিলেন স্ত্রী ঝড়ী মাই | প্রকাশ থাকে যে, ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঝড়ী মাই এর কোল জুড়ে আসে একটি পুত্র সন্তান | লাজ – লজ্জা ভুলে গিয়ে পরদিন সকালেই সন্তান কোলে নিয়ে ফিরে আসেন স্বামীর বাড়িতে , সংসার করেন বেশ কয়েক দিন | হঠাৎ এক রাতে চুপি সারে ১৪ দিনের নিষ্পাপ সন্তানকে ফেলে দিয়ে আসেন বাড়ির বাইরে পাষন্ড পিতা | নিরুপায় হয়ে সন্তানকে বাচার তাগিদে সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি ত্যাগ করে বাবার বাড়িতে চলে এসে সন্তানকে লালন – পালন করেন অসহায় মা ঝড়ী মাই | সেই থেকে যুগে যুগে দফায় দফায় শালিশ হলেও সন্তানের স্বীকৃতি দেয়নি পিতা | এদিকে সন্তান মোঃ সুলতান মিয়া এনআইডি কার্ডে তার পিতৃপরিচয় দিয়েছেন আব্দুল খালেক নামে | দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ১৪ সেপ্টেম্বর পীরগঞ্জের কুমেদপুর ইউনিয়নের শরীফের পাড়া গ্রামে আব্দুল খালেক মিয়ার বাড়িতে অত্র এলাকার জনপ্রতিনিধি , সুধীজন , এলাকাবাসি সহ পরিবারের লোকজনকে নিয়ে মোঃসুলতান মিয়াকে সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন পিতা আব্দুল খালেক | এ সময় পিতা আব্দুল খালেক আবেগাপ্লুত হয়ে কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন , আমি ক্ষোভ ও জেদের বশবতী হয়ে যে ভুল ও পাপ করেছি তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছি | আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি আমাকে সকলেই ক্ষমা করে দেবেন | এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় | পিতা পুত্র সৎ মা সহ বুকে জড়িয়ে নেন পুত্র সুলতান মিয়া বান্টু কে | উপস্থিত সকলেই দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে শান্তির নিঃশ্বাস ফেলেন এবং পরিবারের শান্তি কামনায় দোয়া করেন |