মোঃ সাকিব খান
মাগুরা জেলা প্রতিনিধি:
মাগুরার মহম্মদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কলেজছাত্র সুমন শেখ (১৮) নিহতের ঘটনায় ১৭২ জনের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মহম্মদপুর থানায় নিহত সুমন শেখের বাবা কান্নুর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার সকালে মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের নামের তালিকা পাওয়া যায়। এ মামলায় মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীরেন শিকদার, তাঁর ভাই বিমল শিকদার, মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিদ্দিকী লিটনসহ দলীয় ১৭২ নেতা-কর্মীর নামে মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে আসামিদের
সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে বলে যুক্ত বলে জানা গেছে।
নিহত সুমন শেখ মহম্মদপুর বিএম টেকনিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মামলায় মাগুরা-২ আসনের সাবেক এমপি বীরেন শিকদারে বিরুদ্ধে নিহত সুমন শেখকে হত্যার হুকুম ও মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী কান্নুর রহমান উল্লেখ করেন, তাঁর ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। মাগুরা-২ আসনের সাবেক এমপি বীরেন শিকদার, তাঁর ভাই বিমল শিকদারের হুকুম ও মদদে ৪ আগস্ট সকালে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হুমকি দিয়ে আসেন। পরে সুমন শেখসহ অন্যরা মিছিল নিয়ে মহম্মদপুর থানা এলাকায় যেতে চাইলে আসামিরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। প্রথমে রাস্তায় ফেলে আসামিরা সুমন শেখকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন। একই সময় বালিদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম তাঁর হাতে থাকা রিভলবার দিয়ে সুমন শেখের বাঁ পাঁজরে গুলি করেন।
পরে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিজ গ্রামে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
মামলার বাদী নিহতের বাবা কান্নুর রহমান বলেন, ‘আমরা ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার চাই। যাদের চিহ্নিত করতে পেরেছি, তাদের নামেই মামলা করেছি। রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে কাউকে আসামি করা হয়নি।’
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ঠাকুর দাশ ম-ল জানান, ১৭২ জন আসামির নাম উল্লেখ মামলাটি রুজু হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।