সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:
সিরাজগঞ্জর নাবিক নাজমুল সোমালিয়া জলদস্যুদের হাতে জিম্মি থাকাবস্থায় যখন বাড়িতে কথা বলার সুযোগ শেষ হয়ে গিয়েছিল তখন মনে মনে ভেবেছিলাম বাবা-মায়ের মুখ আর কখনো দেখতে পারবো না। তখন নামাজ পড়তো আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতো হে আল্লাহ তুমি আমি সহ জিম্মি সকল নাবিকদের বাবা-মায়ের বুকে ফিরিয়ে দাও। আল্লাহ আমাদের কথা শুনেছেন।
শনিবার ১৮ মে সকালে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার ৬৭ দিন পর বাড়ি ফিরে মা-বাবাকে জড়িয়ে ধরে এ কথা বলেন নাবিক নাজমুল। তিনি বলেন, বাবা মা ভাই ব্রাদার বন্ধু-বান্ধব গ্রামের সকল
মানুষের দেখা পাব এই আনন্দ প্রকাশ করার ভাষা আমার জানা নেই নাবিক নাজমুল। বাড়িতে ফিরতে পেরেছি, পরিবারকে কাছে পেয়েছি প্রথমেই মহান আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া।
অনেক ভালো লাগছে। বেশ কিছুদিন বাড়িতে থাকবো।
কোরবানি ঈদের পর আবারও জাহাজে ফিরবো।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ১ নং ভদ্রঘাট ইউনিয়নের অন্তর্গত চর নূরনগর গ্রামের আবু সামা ও নার্গিস খাতুন দম্পত্তির ছেলে নাবিক নাজমুল। তিনি বাড়িতে ফিরলে পরিবার, আত্মীয় স্বজন এবং গ্রামবাসী তাকে বরণ করে নেয়। তার ফেরার মধ্য দিয়ে স্বজন-পরিবারের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটে।
মা নার্গিস খাতুন বলেন, আল্লাহ আমার বুকের মানিক আমার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমার আর কোনো কিছু চাওয়ার নেই। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে যে সব মানুষ সাহায্য করেছেন সবাইকে দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের নেক হায়াত দান করেন এবং তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ভারত মহাসাগর থেকে জিম্মি হন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ জন নাবিকসহ। এদের মধ্যে বন্দি জাহাজের ক্রু হিসেবে ছিলেন নাজমুল। জাহাজটি অপহরণের পর থেকে নাজমুলের ফিরে আসার অপেক্ষায় চলেছিলেন মা-বাবা, বোনসহ স্বজনদের আহাজারি। প্রায় এক মাস পর গত ১৪ এপ্রিল ভোরে জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজসহ ২৩ নাবিক। এরপর জাহাজটি পৌঁছে দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে। সেখান থেকে মিনা সাকার নামের আরেকটি বন্দরে চুনাপাথর ভর্তি করার পর চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সব মিলিয়ে ৬৫ দিন পর মুক্ত নাবিকরা বাংলাদেশে ফিরেছেন নাবিক নাজমুল এর পিতা বলেন আমি আমার সন্তানকে জীবিত ফিরে পেয়েছি মহান আল্লাহর কাছে আমিও হাজার হাজার শুকরিয়া জারি করছি এবং যে সমস্ত লোকজন আমার সন্তানকে ফিরিয়ে আনার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি রইল দোয়া ও আশীর্বাদ।