বিপ্লব কুমার দাস। নিজস্ব প্রতিবেদক বাংলাদেশ।
দিনাজপুর ১৩ টি উপজেলার মধ্যে অন্যতম একটি উপজেলা বোচাগঞ্জ উপজেলা। এই উপজেলায় রয়েছে বৃহ শিল্প প্রতিষ্ঠান সেতাবগঞ্জ চিনিকল। এছাড় ও হাসকিং মিল সহ অসংখ্য অটো রাইস মিল গড়ে উঠেছে।
ছয় ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা নিয়ে বোচাগঞ্জ উপজেলা গঠিত। এই উপজেলার প্রায় ১ লক্ষ ৭১ হাজার ৭১৫ জন মানুষের বসবাস। যাতে ৩৪ হাজার ১শত ৯৫ জন মানুষের জন্য রয়েছে মাত্র একজন চিকিৎসক। চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগীদের সেবা দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে বোচাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসকরা। এইসব মানুষদের একমাত্র চিকিৎসা সেবায় আশ্রয়স্থল হলো বোচাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। উপজেলা থেকে জেলা শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। জেলা শহর দুড়ে হওয়ায় এখানকার মানুষের একমাত্র চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শস্যা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যে সংখ্যক চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও সেই সংখ্যক চিকিৎসক নেই। বিশেষ্য চিকিৎসক থাকার কথা ২৫ জন, সেখানে রয়েছে মাত্র ০৫ জন চিকিৎসক। আর এই ০৫ জন চিকিৎসক দিয়েই চলছে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক প্রেরণে দিনাজপুর এম আব্দুল রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছেন। এছাড়াও একজন মাতৃকালীন ছুটিতে রয়েছেন। বোচাগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চাহিদার চেয়ে চিকিৎসক কম থাকা রোগীরা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রায় সময় জেলা শহরে গিয়ে রোগীদের সেবা নিতে হয়। বন্ধ রয়েছে অপারেশন কক্ষ। শেষ কবে অপারেশন কক্ষ খোলা হয়েছিল কবে কেউ বলতে পারেনা। সরজমিনে গেলে দেখা যায় দুই বিভাগে প্রতিদিন প্রায় কম বেশি ২৫০ থেকে ৩০০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। প্রতিদিন জরুরী বিভাগে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী সেবা নিচ্ছে।
এত সংখ্যক চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বর্তমান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসকরা। এই হিমশিম লাগাম করতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডঃ শ্যামলী সাহা প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি বহি বিভাগের রোগী সহ আবাসিক রোগীদের সেবা দিতে দেখা গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র থেকে জানা যায়, ৫০ শস্যায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ০৬ টি ইউনিয়ন মিলে মোট ১৫টি পদের মধ্যে ০৩ জন মেডিকেল অফিসার রয়েছেন। এদিকে ১০ জন বিশেষজ্ঞ কনসালটেস্ট থাকার কথা থাকলেও ০২ জন সার্জারি বিশেষজ্ঞ ও অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ আছেন। সার্জারি বিশেষজ্ঞ পদায়ন থাকলেও প্রেষণে এম আব্দুল রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছেন। গাইনি বিশেষজ্ঞ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, কার্ডিওলজি, অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ, চক্ষু বিশেষজ্ঞ, ইএনটি,চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ ও মিলে ০৮ টি পদ শূন্য রয়েছে। পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় বন্ধ রয়েছে অপারেশন কক্ষ। উপজেলার ০৬ ইউনিয়নে ২২ টি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ০৫ টি রয়েছে। চিকিৎসকের পাশাপাশি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী বেশ কয়েকটি পদ ও ফাঁকা রয়েছে। যেসব তৃতীয় শ্রেণীর পথ ফাঁকা রয়েছে, পরিসংখ্যান স্টোর কিপার, রেডিওলজি, ফিজিওথেরাপি চতুর্থ শ্রেণীর যেসব পথ ফাঁকা রয়েছে অফিস সহায়ক ০৩ জনের মধ্যে ০৩ টি পদ , পরিছন্নতা কর্মী ০৫ জনের মধ্যে ০৪ পথ ফাঁকা রয়েছে, সিকিউরিটি ০২ জনের মধ্যে ০১ পদ ফাঁকা রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসকের সাথে কথা বলে তারা জানান। যদি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ শুন্য পদগুলো পূরণ থাকতো তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসকরা সেবা মান আরো বেশি বাড়তো।