মোঃ হামজা শেখ, রাজবাড়ী:
রাজবাড়ী জেলা বিএনপি, জামায়াত ইসলামি ও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি শর্তেও থামছে না লুটপাট, মারধর ও দখলের ঘটনা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য পলাশ করকে পিছন থেকে আতর্কিত হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। একই দিন বিকেলে বালিয়াকান্দি উপজেলার সোনাপুর বাজারের মীর মশাররফ হোসেন কলেজের সামনে জামাল বিশ্বাসের দোকান থেকে পাট বের করে দিয়ে দখল করেছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল ১১ টার সময় কালুখালী উপজেলার চর কুলটিয়া গ্রামের মোঃ আশরাফ উদ্দিনের বাড়ীতে অর্ধশতাধিক লোক প্রকাশ্য বসতবাড়ীতে আর্তকিত হামলা চালায়। ঘর-বাড়ী ভাংচুর সহ নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মূল্যবান আসবাবপত্রসহ লাইসেন্সকৃত এন.পি.বি পিস্তল ও ৪৮ রাউ- গুলি জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
মোঃ আশরাফ উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের নিকট এন.পি. বি পিস্তল ও ৪৮টি গুলি উদ্ধারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যাগ করার পর পরই রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মোঃ জিল্লুল হাকিমের পাংশা বাসভবন, রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীর বাসভবন, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দু’টি ফিলিং স্টেশন, গোল্ডেশিয়া জুট মিলস, কালুখালীতে মদাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজনুর মার্কেট, গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মন্ডলের বাড়ী ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিতরা।
এদিকে, রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ হারুন, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী সহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীরা কঠোর হুসিয়ারী সহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়া বসালেও থামছে না মারধর, দখল, হুমকি, ধামকির ঘটনা।
রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম প্রকাশ্যে সমাবেশ করে বলেন, কোন নেতাকর্মীরা কোন পাতা ফাঁদে পা দিবেন না। কেউ লুটপাট, দখল, মারধর করবেন না। আমি ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলেছি। তাদেরকেও স্বাভাবিক কাজ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ হারুন বলেন, আমি রাজবাড়ী, পাংশা, কালুখালী, বালিয়াকান্দি উপজেলায় সমাবেশ করে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছি। কেউ যাতে কোন প্রকার হামলা, লুটপাট ও মারধর না করে।
রাজবাড়ী জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণাধীন ৫টি থানায় শুক্রবারও কোন কার্যক্রম শুরু করেনি। তবে সেনাবাহিনীর টহল জোড়দার রয়েছে। পাশাপাশি আনসার বাহিনী ও শিক্ষার্থীরা সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছেন।