মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:
ভাদ্রের তালপাকা গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং। ফলে ভয়াবহ ভোগান্তির মুখে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার জনজীবন। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়া সহ অফিসিয়াল কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার পাশা-পাশি ব্যবসা- বানিজ্যে ভাটা পড়েছে। এমনকি ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মাস শেষে বিদুৎ বিল ঠিকই দিগুন হয়ে আসছে। এতে করে জনসাধারণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন জগন্নাথপুর উপজেলার সর্বত্রই ঘন্টার পর ঘন্টা, দিন ও রাতে প্রয়োজনীয় বেশীর ভাগ সময় পল্লী বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং চলছে। মোবাইল ফোনের মিসড কলের মতো বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে। এই আছে আবার নেই, আকাশের বিজলীর মতো বিদ্যুৎ এর ভেলকিবাজি চলছে। দিনের বেলায় অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় অফিসিয়াল কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার পাশা-পাশি উপজেলা সদর জগন্নাথপুর বাজার সহ অত্র উপজেলার সবকটি হাট-বাজারে ব্যবসা-বানিজ্যে ব্যাঘাত ঘটছে।
দিন- রাত মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় সর্বসাকুল্যে ৬/৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত সন্ধ্যালগ্ন থেকে রাত ৮/৯ ঘটিকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং চলায় স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনকি ফ্রিজে রাখা ঔষধ এর মান বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাখা মাছ-মাংস নষ্ট হচ্ছে। অপ্রিয় হলেও বাস্তবতা যে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল তুলনা মূলক ভাবে দিগুণ আসছে। এতে করে প্রায় সময়ই বিল রাইডার ও গ্রাহকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হচ্ছে।
২৪ ঘন্টায় গড়ে ৫/৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। যার ফলে অফিসিয়াল কার্যক্রম ও শিক্ষার্থীদের লেখা- পড়া বিঘ্নিত হওয়ার পাশা-পাশি ব্যবসা বানিজ্যে ধ্বস নেমেছে। ফ্রিজে রাখা ঔষধ সামগ্রী ও মাছ-মাংস নষ্ট হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং এর ফলে মোমবাতি, চার্জার লাইট ও জেনারেটর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। কষ্টের বিষয় হলো বিদ্যুৎ না থাকলে কি হলো বিদুৎ বিল কম আসা দূরে থাক। মাস শেষে ঠিকই বিদ্যুৎ বিল দিগুণ হয়ে আসছে। জনস্বার্থে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলার মোহাম্মদগঞ্জ বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত পল্লী বিদ্যুৎ এর ঘন ঘন লোডশেডিং চলছে।লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্রিজে থাকা জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি তোলা যাচ্ছে না। অচল হয়ে পড়েছে ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ। প্রচণ্ড তাপদাহের সঙ্গে বিদ্যুতের অত্যাচারে শিশু ও বয়স্ক মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎ এর একাধিক গ্রাহক বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। এতো বেশি লোডশেডিং মানা যায় না। আমাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার বিরাট ক্ষতি হচ্ছে।
জগন্নাথপুর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ব্যবস্থাপক জানান, নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ দিতে প্রতিদিন গড়ে ৭ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন রয়েছে এর মধ্যে জগন্নাথপুর ৩ সাড়ে ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে কমিয়ে আনায় ঘাটতি পূরণের জন্য এক ঘন্টা পরপর লোডশেডিং শুরু হয়।