মোঃ হামিদুজ্জামান জলিল স্টাফ রিপোর্টার :
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিচার বহির্ভুত দুই শিবির নেতা হত্যাকান্ডের অভিযোগে সাবেক ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার, অতিঃ পুলিশ সুপার, ওসি সহ ৭ পুলিশ কর্মকর্তা এবং সাবেক কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও দুই মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান সহ ১২ জনের নামে আদালতে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহ আমলী জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট কালীগঞ্জ আদালতে মামলা দু’টি দায়ের করেন শিবির নেতা নিহত আবুজার গিফারীর পিতা কালীগঞ্জ পৌর এলাকার চাপালী গ্রামের নুর ইসলাম এবং অপরটি নিহত শামীম মাহমুদের পিতা বাকুলিয়া গ্রামের রুহুল আমিন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ওই দুই শিবির নেতা সাদা পোশাকে পুলিশের পরিচয়ে অপহরণ পূর্বক নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যার শিকার হয়েছিল। ওই দু’টি মামলার আসামীরা হলেন, ঝিনাইদহ সাবেক পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অতিরক্তি পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ. কালীগঞ্জ থানার সাবেক ওসি আনোয়ার হোসেন, এস আই নিরব হোসেন, আশরাফুল আলম, নাসির হোসেন, আব্দুল গাফ্ফার, ইমরান হোসেন, সাবেক কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ ও মোস্তাফিজুর রহমান বিজু, সাবেক এমপির পি এস আব্দুর রউফ, ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, আলী হোসেন অপু ও মহিদুল ইসলাম মন্টু এবং নিমতলা বাজারের রবিউল হাজি। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, পৌর এলাকার চাপালী গ্রামের আবু জার গিফারী ইসলামী ছাত্র শিবিরের কালীগঞ্জ পৌর শাখার সভাপতি ও বাকুলিয়া গ্রামের শামিম মাহমুদ শিবিরের দ্বায়িত্বশীল কর্মী ছিলেন। ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ দুপুর দুইটার দিকে আবুজার গিফারী নামাজ পড়ে ফেরার পথে তার বাড়ীর সামনে থেকেই দুই মটরসাইকেলে ৪ জন সাদা পোশাকধারী পুলিশ পরিচয়ে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় থানা ও পুলিশের অন্যান্য দপ্তরে যোগাযোগ করেও তার সন্ধান পায় না। এরপর ঘটনার ২৫ দিন পর ১৩ এপ্রিল ২০১৬ ভোরে যশোরের হৈবৎপুর ইউনিয়নের লাউখালী বিরামপুকুর শ্বশ্নান ঘাটে কথিত বন্দুক যুদ্ধের নামে মাথায় গুলি লাগা অবস্থায় গিফারীর লাশ মেলে। অপরজন বাকুলিয়া গ্রামের শামিম হোসেনকেও একই দিনে কালীগঞ্জ সরকারী এম ইউ কলেজের পূর্ব পাশের গেট থেকে অপহরণ হয়েছিল। তাকেও একই দিনে একই স্থান থেকে লাশ পাওয়া যায়। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ অপহরণের পর তারা স্থানীয় আ’লীগের সাংসদের সাথে যোগাযোগ করেও সন্তানদের সন্ধান মেলাতে পারেনি। ওই সময়ে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের সদস্যরা তাদের সন্তানদের অপহরণপূর্বক অনেক নির্যাতন চালিয়েছিল। মামলায় আসামীদের বিচার চান ভূক্তভোগী পরিবারদ্বয়। আদালত ফৌজদারী কার্ষবিধি অনুযায়ী ১৫৬(৩) ধারায় কালীগঞ্জ থানাকে মামলা দুটি গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, নিহত ওই দুই শিবির নেতার স্মরণে গত সপ্তাহে কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীরা শহরের গান্না সড়কে চাপালি রাস্তাটিকে মরহুম আবুজর গিফারী ও বাকুলিয়া রাস্তাটি শামীম মাহমুদের নামে নামফলক স্থাপন করেন। একটি মামলায় ১১ জন অপর একটি মামলায় ২৩ জনকে আসামী করা হয়েছে। কালীগঞ্জ থানার ওসি জানান আদালত থেকে এ মর্মে আমি কোন কাগজ পায়নি।